• শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৪ ১৪৩১

  • || ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

দৈনিক জামালপুর

আধিপত্য নিয়ে সংঘর্ষে আহত ১০, শত শত ককটেল বিস্ফোরণ

দৈনিক জামালপুর

প্রকাশিত: ২৯ মার্চ ২০২৪  

শরীয়তপুরের বিলাশপুর ইউনিয়ন পরিষদে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে বিজয়ী ও পরাজিত চেয়ারম্যান প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। সেই সংঘর্ষে শত শত ককটেল বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। এ ঘটনায় ১০ জন আহত হয়েছেন। আহতদের জাজিরা ও ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বুধবার রাত ৯টার দিকে ককটেলের আঘাতে সজিব নামে এক যুবক মারাত্মক আহত হন। অবস্থার অবনতি হলে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। একই সংঘর্ষের ঘটনায় আহত সজিব মুন্সী (২৫) শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলার বিলাশপুর ইউনিয়নের মিয়া চান মুন্সী কান্দি গ্রামের মোহাম্মদ আলী মুন্সীর ছেলে। এছাড়া জাকির হোসেন (৩৫), মিলন মিয়া (৪৫), আক্কাস শেখ (৫০), জয়নাল মাল (২৩), রনি পেদা (৩৫), শহীদ খাসহ (২৬) গুরুতর আহত অবস্থায় ১০ জনকে জাজিরাসহ বিভিন্ন হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে বিলাশপুর ইউনিয়ন পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান আব্দুল কুদ্দুস বেপারী ও পরাজিত চেয়ারম্যান প্রার্থী জলিল মাদবরের সঙ্গে দীর্ঘদিনের বিরোধ চলে আসছিল। মঙ্গলবার মিয়া চান মুন্সি কান্দির গিয়াস উদ্দিনের সঙ্গে তার চাচাতো ভাই অপু ও অনিকের সঙ্গে জমি নিয়ে ঝগড়া হয়। এর জের ধরে বুধবার রাতে দুপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। সংঘর্ষে দুই চেয়ারম্যান প্রার্থীর সমর্থকরা শত শত ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটায়। এতে পুরো এলাকা কেঁপে ওঠে। এ সময় ককটেলের আঘাতে সজিব মুন্সী নামে একজন গুরুতর আহত হলে স্থানীয়রা তাকে জাজিরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। সজিব মুন্সীর পেটের নাড়ি-ভুঁড়ি বের হয়ে যাওয়ায় তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। এ সময় আরও ৯ জন আহত হন। এলাকায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। রতন মাদবর বাদী হয়ে ২৭ জনকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেন। বৃহস্পতিবার সকালে জাজিরা থানার পুলিশ সামচুল হক নামের একজনকে গ্রেফতার করেছে। এ ব্যাপারে বিলাশপুর এলাকার মতিন বেপারী বলেন, বিলাশপুরে কুদ্দুস চেয়ারম্যান ও জলিল মাদবর গ্রুপের সংঘর্ষ হয়। এতে শত শত বোমা বিস্ফোরণ ঘটায়। ককটেল বিস্ফোরণের শব্দে এলাকার শিশু ও বৃদ্ধরা ভীত হয়ে পড়ে। বিলাশপুরের সংঘর্ষ নিয়ে পরাজিত চেয়ারম্যান প্রার্থী জলিল মাদবর বলেন, গত মঙ্গলবার জমি নিয়ে দুই চাচাত ভাইয়ের দ্বন্দ্বকে কেন্দ্র করে সন্ধ্যার পরে কুদ্দুস বেপারীর লোকজন বাড়িঘর লুটপাট করেছে। এ সময় একজনের হাতও ভেঙে দেয়। এরপর বুধবার রাতে কুদ্দুস বেপারী নিজে তার লোকজন নিয়ে এসে ককটেল মারে। ককটেলের আঘাতে আমার সমর্থক সজিব নামের একজনের নাড়ি-ভুঁড়ি বের হয়ে গেছে। আমি ঢাকায় আছি, এ ঘটনায় আমি মামলা করব। বিলাশপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল কুদ্দুস বেপারী বলেন, মহর খার কান্দি নামে একটি গ্রাম আছে। ওখানে বসে আমার ৫-৬ জন লোক চা পান করছিল। এমন অবস্থায় জলিল মাদবর গ্রুপের একদল লোক বোমা নিয়ে তাদেরকে ধাওয়া করে। ধাওয়া খেয়ে আমার লোকজন ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। যতটুকু জানতে পেরেছি, ধাওয়া দিতে গিয়ে জলিল মাদবর গ্রুপের আহত ওই লোকটা বোমা নিয়ে রাস্তার পাশে পড়ে গিয়েছিল। এরপর বিস্ফোরণ হয়ে সে আহত হয়। আমার সমর্থক গিয়াস উদ্দিনের বাড়িসহ ১০টি বাড়িতে ককটেল মেড়ে লুট করা হয়েছে। যার আঘাতে আহত গিয়াস উদ্দিন বর্তমানে ঢাকা মেডিকেলে ভর্তি রয়েছে। শরীয়তপুর পুলিশের অতিরিক্ত সুপার (নড়িয়া সার্কেল) আহসান হাবীব বলেন, বিলাশপুরে ককটেল বিস্ফোরণে আহতের ঘটনার সত্যতা রয়েছে। বিলাশপুরে প্রতিদিনই পুলিশের দুই থেকে তিনটি টিম মোতায়েন করা থাকে। পুলিশ যদি মোতায়েন করা না থাকত, তাহলে হয়ত আরও সংঘর্ষ ঘটত। আমরা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা করছি। ক্ষতিগ্রস্তরা অভিযোগ দিলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

দৈনিক জামালপুর
দৈনিক জামালপুর